সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন
লাইফস্টাইল ডেস্ক :
শীত এলেই দেখা দেয় ঠোঁট ফাটা, গোড়ালি ফাটাসহ ত্বকের নানা সমস্যা। এসময় আরেকটি সমস্যা দেখা দেয়। তা হলো মুখের ভেতরে বা জিভে ছোট ছোট সাদা বা লালচে ঘা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে অ্যাপথাস আলসার (Aphthous Ulcer) বা ক্যানকারসোর বলা হয়।
গরম মশলাদার খাবার তো দূরের কথা, এসময় পানি পান করতেও কষ্ট হয়। কিন্তু শীত এলে এই সমস্যা বাড়ে কেন? এটি থেকে মুক্তির উপায়ই বা কী? চলুন জানা যাক-
শীতে মুখের আলসার বাড়ে কেন?
শীতকালে আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রায় কিছু ভুলের কারণে এই সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। এগুলো হলো-
১. পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন:
শীতকালে আমাদের তৃষ্ণা কম পায়, তাই আমরা পানি কম খাই। শরীরে পানির অভাব হলে মুখের লালাগ্রন্থি শুকিয়ে যায় এবং মিউকাস মেমব্রেন বা শ্লেষ্মা ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে আলসার তৈরি হয়।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া:
শীতে সর্দি, কাশি বা জ্বরের প্রকোপ বাড়ে। শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে আলসার তৈরি করে।
৩. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন:
শীতে শরীর গরম রাখতে অনেকেই অতিরিক্ত ঝাল, তেল-মশলাযুক্ত খাবার, চা-কফি বা ভাজাভুজি বেশি খান। এসব খাবার পেটের সমস্যা এবং মুখের ভেতরের সংবেদনশীল ত্বকে প্রদাহ তৈরি করে।
৪. ভিটামিনের অভাব:
শীতের সময় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে শরীরে ভিটামিন বি১২ (Vitamin B12), আয়রন, জিঙ্ক বা ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে আলসার দেখা দেয়।
শীতে আলসারের সমস্যা থেকে বাঁচার উপায়
সাধারণ আলসার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। তবে ব্যথা কমাতে এবং দ্রুত নিরাময়ের জন্য নিচের উপায়গুলো কাজে লাগাতে পারেন-
১. পর্যাপ্ত পানি পান:
শীতকালেও অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এতে শরীর হাইড্রেট থাকবে। আর শরীর হাইড্রেটেড থাকলে মুখের লালা নিঃসরণ ঠিক থাকে এবং ঘা দ্রুত শুকায়।
২. মধু ও হলুদের ব্যবহার:
এক চিমটি কাঁচা হলুদের গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে আলসারের ওপর লাগান। মধুর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ ব্যথা ও সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
৩. লবণ পানিতে গার্গল:
হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার কুলকুচি করুন। এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ঘা শুকাতে সাহায্য করে।
৪. দই বা প্রোবায়োটিক খান:
টক দই খান। দইয়ে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিক পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি আলসার কমাতেও সাহায্য করে।
৫. গ্লিসারিন বা নারকেল তেল:
ব্যথার জায়গায় সামান্য গ্লিসারিন বা নারকেল তেল লাগান। এতে জায়গাটি আর্দ্র থাকে এবং জ্বালাপোড়া কমে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
আলসার যদি ২ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, আকারে খুব বড় হয় বা এর সঙ্গে জ্বর ও তীব্র ব্যথা থাকে, তাহলে অবহেলা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
You must be logged in to post a comment.